
আজ হঠাৎ ফেইসবুকে একটি লেখা আমার হৃদয়কে দারুণভাবে নাড়া দিয়ে দিলো।
লেখনীর প্রতিটি শব্দ যেন হৃদয়ে ঢুকে গিয়ে এক ধরনের ব্যথা ও ভালবাসার মিলিত সুর তোলপাড় করতে থাকে।।
“”‘লেখাটি ভাণ্ডারী গানের সম্রাজ্ঞী আমার বোন
দিল আফরোজের—–
আমি তাঁকে দীর্ঘদিন ধরে চিনি, জানি। সে একজন নরম মন, কোমল হৃদয়ের মানুষ—যার জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ই যেন সংগ্রাম, কিন্তু তাতে কখনো হতাশা নয়, বরং এক প্রশান্ত নিরব আত্মসমর্পণ।
“”আমি এমন একজন মানুষ–
পৃথিবীর সর্বোচ্চ কষ্ট হজম করার ক্ষমতা আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন। বহু পথ, বহু সাধনা, বহু পরীক্ষা দিয়ে জীবনের যুদ্ধে জয়লাভ করেছি। আমি মনে করি, আমি সফল।
জীবনে অনেক কিছু পেয়েছি, আবার অনেক কিছু হারিয়েছি—আবার ফিরে পেয়েছিও।
আমাকে যারা পছন্দ করে না, আমি তাদের পাশে যাই না।
আমি ঝগড়া করতে পারি না, মুখে কথা পেঁচিয়ে যায়—নিরবে সরে যাই।
আমার সব না বলা কথা আমি শুধু আল্লাহর কাছেই বলি।
জীবনে যাকে যত বেশি ভালোবেসেছি, তার কাছ থেকেই বেশি আঘাত পেয়েছি।
কিছু খারাপ সময় এসেছে, যখন মানুষের সাহায্য পাইনি—আচমকা ভাবে আল্লাহ নিজেই আমার সমস্যা সমাধান করে দিয়েছেন।
আমি আপ্যায়নপ্রিয়, মানুষকে আদর করে খাওয়ানো, নিজ থেকে সাহায্য করা আমার স্বভাব।
জীবনে কারো এক বিন্দু ক্ষতিও করিনি।
নিজের আপনজনরাও আমার মন বোঝেনি…
তবুও আমি বিশ্বাস করি, মানুষই মানুষের জন্য।
‘আপন-পর’ বলে কিছু নেই। সবাই আমরা এক আল্লাহর সৃষ্টি।
আমার আল্লাহর কাছে একটাই চাওয়া—আমি যেন হেরে না যাই।
অনেক সুখ পেয়েছি, আবার অনেক কষ্টও নিরবে লালন করেছি।
সুখ-দুঃখ দুটোই আল্লাহর নিয়ামত।””
এই লেখাটি যখন পড়লাম, তখন শুধু পাঠক হয়ে থাকতে পারিনি। কলম হাতে তুলে নিতে বাধ্য হলাম—বোন দিলআফরোজ, তোমার জন্য কিছু লিখতেই হলো।
দিলআফরোজ, তোমার নিঃশব্দ কষ্টের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে…
তুমি জানো না, তোমার এই লেখা কত গভীরে পৌঁছে যায়।
তুমি সেই মহামানুষ, যিনি কোনো কিছুরই প্রতিদান চাও না, শুধু মানুষের মুখে একটু হাসি ফোটাতে চাও।
তুমি কাঁদো, কিন্তু কাউকে দেখাও না। তুমি ভালোবাসো, অথচ কোনো প্রত্যাশা ছাড়াই।
তুমি ক্লান্ত হও, তবু নিরবে চুপচাপ সহ্য করো।
তোমার মতো মানুষদের কষ্ট হয় একটু বেশি—কারণ তোমাদের হৃদয় একটু বেশি নরম, অনুভব একটু বেশি তীক্ষ্ণ।
তবুও বলতে বাধ্য হলাম বোন দিল আফরোজ, তুমি হেরে যেও না।
তুমি যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াও, সেভাবেই একদিন মানুষ তোমার কাছে ফিরে আসবে।
তুমি যেভাবে নিজের আবেগকে আটকে রাখো, সেভাবেই একদিন শান্তির বারি হয়ে ফিরবে আল্লাহর রহমত।
তুমি একজন যোদ্ধা, একজন শিল্পী।
তোমার ভালোবাসা, ত্যাগ, নিরব প্রার্থনা—all of it has meaning.
আল্লাহ তোমার প্রতিটি কান্না শুনছেন, প্রতিটি অভিমান জানেন।
তুমি আলোর পথের পথিক, তুমি হেরে যাওয়ার জন্য না—তুমি সৃষ্টি হয়েছো অন্যদের আশার আলো দেখানোর জন্য।
শেষ কথায়…
প্রিয় বোন দিল আফরোজ,
তোমার এই মনখারাপের লেখাটি শুধু কষ্ট নয়, সাহসেরও প্রতিচ্ছবি যোগায়।
তুমি এগিয়ে চলো। হৃদয় শক্ত করে সামনের দিকে বাড়ো।
আল্লাহ যেভাবে আজ অব্দি তোমার সহায় হয়েছেন, আগামীতেও তিনিই তোমার সহায় হবেন।
তুমি একা নও।
এই দুনিয়ায় প্রতিটি নরম হৃদয়ের মানুষই তোমার অনুভবের সুর্যসাথি।
একজন পুরনো চেনা হৃদয় থেকে ভালোবাসা ও দোয়া সহ তোমার সাথে সাথী হওয়ার অঙ্গিকার রইল।
“”কবিতার ভাষায় বলি–
দুঃখের ছায়া মন ছুঁয়ে গেলেও, হার মানিস না বোন দিল আফরোজ,
আলোর পথে হাঁটিস চুপচাপ, তোর সাহসই তো
সবচেয়ে বড় সাজ।
আঘাত যারা দেয়, তারাও একদিন বুঝবে ভালোবাসার মানে কি ❓
তুই তো সেই নদী, যে কাঁদে চুপিচুপি, তবু বয়ে চলে প্রাণে প্রাণে।
মন খারাপের অন্ধকারে নয়, উঠে দাঁড়া নিজের আলোয়,
কারণ আল্লাহর কাছে তোর প্রতিটি অশ্রু এক অনন্ত দোয়া।