
গত ২৩ এপ্রিল সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের তথা কথিত বান্ধবী তৌফিকা আফতাব ওরফে তৌফিকা করিমের নামে থাকা ৩৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের পর ৩৭৪ কোটি ৫১ লাখ ৪৭ হাজার ৯৮৪ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
সর্বশেষ অ্যাকাউন্টে থাকা ৫৬ কোটি ৬১ লাখ ৫৬ হাজার টাকার অবৈধ অর্থের তথ্য পেয়েছে দুদক।
শনিবার (২৪ মে) দুর্নীতি দমন কমিশন “দুদক” আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের জন্য তার বিরুদ্ধে মামলার অনুমতি দিয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, এই বিপুল অর্থের বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য উৎসের পরিমাণ পাওয়া যায় মাত্র ২ কোটি ৬২ লাখ ৭ হাজার ৭২৬ টাকা।
এছাড়াও তার নিজের নামে ৮৮টি হিসাবের মাধ্যমে মোট ২০১ কোটি ৮৮ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪১ টাকা জমা ও ১৭২ কোটি ৬২ লাখ ৬৯ হাজার ৩৪৩ টাকা উত্তোলনসহ সর্বমোট ৩৭৪ কোটি ৫১ লাখ ৪৭ হাজার ৯৮৪ টাকার সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেন করার তথ্য পেয়েছে দুদক।
এরআগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি তৌফিকা করিমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেছিলেন, দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম এ আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
আবেদনে বলা হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং তৌফিকা আফতাবসহ অন্যান্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্তের জন্য অনুসন্ধানী টিম গঠন করা হয়েছে।
অনুসন্ধানকালে আনিসুল হকের বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন হিসেবে তৌফিকা আইন মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন বিচারিক আদালতে নিয়োগ, বদলি, জামিনসহ বিভিন্ন অবৈধ তদবির বাণিজ্য, দুর্নীতির মাধ্যমে নিজ ও অন্যান্য নামে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। তৌফিকা তার অবৈধ আয়ের টাকায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকায় একটি বিলাসবহুল বাড়ির মালিকানা অর্জন করেছেন। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ও সিটিজেনস ব্যাংকে তার নামীয় অ্যাকাউন্টে ২৩ কোটি ৩১ লাখ ৭৪ হাজার ৭৩৭ টাকা গচ্ছিত রয়েছে। সিটিজেনস ব্যাংকে তার ৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে।
তৌফিকা অবৈধভাবে অর্জিত ওই সম্পদ হস্তান্তর করে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন। তাই তার বিরুদ্ধে বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া প্রয়োজন।